কবির হোসেন। একাধারে ডিজিটাল মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ, সৃজনশীল গ্রাফিক্স ডিজাইনার, উদ্যোক্তা ও ব্লগার। তিনি ক্যারিয়ার শুরু করেছেন ক্রিয়েটিভ ডিজাইন দিয়ে। সময়ের পরিক্রমায় চলে এসেছেন ডিজিটাল মার্কেটিং দুনিয়ায়। সৃজনশীলতা, উদ্যোম আর একাগ্রতার সমন্বয়ে অর্জন করেছেন পেশা সংশ্লিষ্ট সফলতা। তার গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারেও বিস্তৃত।

তিনি কোনো পণ্য বিক্রি করে কোটিপতি হননি বরং তিনি এমন ধরনের সেবা বিক্রি করেছেন, যা বহু মানুষের আরাধ্য। বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশে সৃজনশীলতা বিক্রি করে কীভাবে সফল হতে হয়, এই ধারণা পেতে যারা আগ্রহী, তাদের জন্য কবির হোসেন উদাহরণ।

কবির হোসেন এর পথ চলা – Kabir Hossain Success Story

সৃজনশীলতা বিক্রি করে সফল কবির হোসেন - Kabir Hossain Success Story
সৃজনশীলতা বিক্রি করে সফল কবির হোসেন – Kabir Hossain Success Story

তার বেড়ে ওঠা বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন শহর লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জে। ছোটবেলা থেকেই নতুন কিছু করার চিন্তাকে সঙ্গে নিয়ে বড় হয়েছেন। শুরুতে আগ্রহ ছিলে গ্রাফিক্স ডিজাইনের ওপর। সেই চিন্তা থেকে ডিজাইনের হাতেখড়ি নেওয়া। তারপর ধীরে ধীরে উপস্থিত হলেন আন্তর্জাতিক বাজারে। মিললো ব্যাপক সাফল্য।

আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সাথে দেশের বাজারে নিজের সৃজনশীলতা আর সাফল্য প্রমাণের তাগিদ থেকে সিনিয়র গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে নিয়োগ নিলেন ইংরেজি দৈনিক ‍‌‍দি নিউ ন্যাশনস-এ। সেখান থেকে জনপ্রিয় বাংলা পত্রিকা দৈনিক ইত্তেফাক গ্রুপে যোগ দিলেন ক্রিয়েটিভ ইনচার্জ হিসেবে। তারপর লাইফ স্টাইল বিষয়ক বিখ্যাত ম্যাগাজিন ‌ক্যানভাস’-এ কাজ শুরু করলেন ক্রিয়েটিভ ডিপার্টমেন্টের প্রধান হয়ে।

কবির হোসেন খুব অল্প সময়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনের পাশাপাশি ডিজিটাল মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে সফল হিসেবে প্রমাণ করেছেন। এর শুরু ‘ব্রান্ডিলেন ডিজিটাল’ দিয়ে হলেও পরবর্তী সময়ে তা ‘ডিজিটেন্ট কমিউনিকেশন’ নামে প্রতিষ্ঠিত। সোশ্যাল মিডিয়ার ডিজিটাল মার্কেটিং, ডিজিটাল কন্টেন্ট নির্মাণ থেকে ডিজিটাল ব্র্যান্ডিংয়ের সমস্ত শাখা-প্রশাখা নিয়ে কাজ করে ডিজিটেন্ট। বিভিন্ন ধরনের এজেন্সির হয়ে কন্টেন্ট প্রজেকশন এবং ডিস্ট্রিবিউশনের মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মূল কাজ করে ডিজিটেন্ট।

আজ কবির হোসেন একজন সফল উদ্যোক্তা – Kabir Hossain is Now a Succesful Entrepreneur

 

তার উদ্যোক্তা জীবনের শুরু ব্রান্ডিলেন (Brandylane) দিয়ে। গ্রাফিক্স ডিজাইন এ আর ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা থাকায় এখানে হোঁচট খেতে হয়নি। পরিশ্রম আর সৃজনশীলতার যৌথ প্রয়াসের নিবিড় সমন্বয়ে নিজেকে উদ্যাক্তা হিসেবে সফল প্রমাণ করতে সময় নেন মাত্র দুইবছর। ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে কবির হোসেনের দর্শন খুব পরিষ্কার-‌‘ডিজিটাল চ্যানেল ব্যবহার করে পণ্যের প্রোমোশন করাই হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। সোশ্যাল মিডিয়া, সার্চ ইঞ্জিন, ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং-এসবই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অন্তর্ভুক্ত’।

বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিংকে বিশাল একটি সম্ভাবনার ক্ষেত্র বলে মনে করেন কবির হোসেন। করোনা মহামারি পরবর্তী ব্র্যান্ডিং ও মার্কেটিং বাস্তবতায় দিন দিন ডিজিটাল কন্টেন্টের গুরুত্ব বাড়ছে। এই ফিল্ডে তরুণদের কাজ করার ওপর জোর দেন তিনি।

তিনি বলেন, ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ শুরু করতে চাইলে প্রথমেই নিজের দক্ষতা বাড়াতে হবে। জানতে হবে বিভিন্ন টুলসের ব্যবহার। পাশাপাশি রিসার্চের বিকল্প নেই। মানুষ কী ধরনের কন্টেন্ট পছন্দ করছে-লক্ষ্য রাখতে হবে সেদিকে। ভাবতে হবে বাজার নিয়ে। কারণ, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক কন্টেন্টের বিষয়বস্তু বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তবে ট্রেডিশনাল বা ডিজিটাল যে মার্কেটিং’ই হোক না কেনে, সৃজনশীলতার কোনো বিকল্প নেই। ক্রিয়েটিভ কিছু করার তাড়না ভেতরে না থাকলে এই পেশায় সফল হওয়া সম্ভব নয়।

একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি বিশ্বাস করেন সফলতার কোনো শর্টকার্ট নেই। মানুষ নিজের সততা, একাগ্রতা, কাজ এবং পরিশ্রম দিয়ে সফল হয়ে ওঠে। ডিজিটাল মার্কেটিং দুনিয়ায় ক্রিয়েটিভিটি একটি খুঁটির মতো। পেশাগত দক্ষতার পাশাপাশি সৃজনশীল কাজের মাধ্যমেই ভিন্ন কিছু করা সম্ভব। নিজে হেড অব ক্রিয়েটিভ হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দিতে চান সবার মাঝে।

পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, এগোতে হবে বহুদূর। ডিজিটেন্ট কমিউনিকেশনকে দেশের পরিধি ছাড়িয়ে বিশ্ববাজারে উপস্থাপন করার স্বপ্ন আর চেষ্টাতেই চলে যাচ্ছে দিন।

লেখক: ফিচার লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী।

সূত্র: রাইজিং বিডি.কম

Next

Guide to Community Brand Building

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Post Comment